![]() |
টক দই একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এতে কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি থাকে না। এর পুষ্টিগুণ দুধের চেয়েও বেশি। এটি রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। আসুন জেনে নিই টক দইয়ের নানা উপকারিতা সম্পর্কে।
টক দই একটি পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন, খনিজ ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এতে কার্বোহাইড্রেট এবং চর্বি থাকে না। এর পুষ্টিগুণ দুধের চেয়েও বেশি। এটি রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। আসুন জেনে নিই টক দইয়ের নানা উপকারিতা সম্পর্কে।
টক দই খাওয়ার উপকারিতাঃ
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো:
খাবারের গুণে টক দইয়ের তুলনা নেই। এতে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি১২। বারবার অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার ভালো ব্যাকটেরিয়ার সাথে অন্ত্রের খারাপ ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে। দইয়ে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়া ক্ষতিকর রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে শরীরে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। তাই নিয়মিত টক দই খাওয়া শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া শরীরে সর্দি, ফ্লু ও জ্বর প্রতিরোধেও এটি ভালো কাজ করে।
হজম শক্তি বাড়ায়:
টক দইয়ে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়া শরীরে উপকারী ব্যাকটেরিয়া বাড়াতে এবং হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। দইয়ে থাকা উপকারী ব্যাকটেরিয়া ল্যাকটোজ ভেঙে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরি করে। ফলে গ্যাসের সমস্যা কমে। তাছাড়া এতে থাকা আমিষ সহজে এবং দুধের তুলনায় অনেক কম সময়ে হজম হয়। তাই যাদের দুধ হজমের সমস্যা আছে তারা দুধের পরিবর্তে টক দই খেতে পারেন।
শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ:
টক দই গ্রীষ্মকালে শরীরের জন্য একটি আদর্শ খাবার। এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই গরমকালে খুব গরম হলে নিয়মিত টক দই খেতে পারেন।
শরীরের ওজন কমাতে:
টক দই একটি ভালো খাবার কারণ এতে চর্বি কম থাকে। এতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ থাকে যা হজম হতে শরীরের অনেক সময় লাগে। ফলে পেট ভরে যায় এবং বেশি শক্তি পাওয়া যায়। ফলে সে অতিরিক্ত খাবার খেতে চায় না। এটি খেলে পেট ভরে যায়। তাই পুষ্টিকর ক্যালরি ছাড়া জাঙ্ক ফুড বা ফাস্টফুড না খেয়ে পুষ্টিকর টক দই খেতে পারেন যা ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করা:
টক দই ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ। এটি ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ যা হাড় এবং দাঁত গঠন এবং মজবুত করতে সাহায্য করে। তাই অস্টিওপোরোসিস এবং আর্থ্রাইটিস বা গাউটের রোগীরা নিয়মিত টক দই খেলে উপকার পেতে পারেন। বিশেষ করে যেসব মহিলারা উচ্চ ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে ভোগেন তাদের নিয়মিত টক দই খাওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে:
কম চর্বিযুক্ত টক দইয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রোবায়োটিক যেমন ল্যাকটোব্যাসিলাস, অ্যাসিডোফিলাস, যা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এটি রক্ত পরিশোধনে ভূমিকা রাখে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা নিয়মিত টক দই খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। নিয়মিত টক দই খেলে শরীরকে অন্যান্য খাবার থেকে পুষ্টি যোগায়। ডায়াবেটিস ও হৃদরোগীরা নিয়মিত টক দই খেলে তাদের রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
বুড়িয়ে বা অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধ করতে:
এটি মস্তিষ্ককে উপকারী স্ট্রেস-রিলিভিং অ্যামিনো অ্যাসিড "টাইরোসিন" প্রদান করে, যা শিথিলতা প্ররোচিত করে এবং ক্লান্তি কমায়। এটি শরীরে টক্সিন জমতেও বাধা দেয়। শরীরে টক্সিন কমার কারণে ত্বকের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি পায়। এটি খাদ্যনালী পরিষ্কার রেখে শরীরকে সুস্থ রাখে এবং ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধ করে।
টক দই একটি পুষ্টিকর, তৃপ্তিদায়ক, জনপ্রিয় এবং সহজলভ্য খাবার। টক দই পুষ্টিগুণের দিক থেকে অলরাউন্ডার। ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি১২- কী নেই টক দইয়ে! তাই প্রত্যেক মানুষেরই নিয়মিত টক দই খাওয়া উচিত।
রেফারেন্স: daktarbhai.com