প্রতিদিন আপেল খাওয়া এর ১০ টি কার্যকর উপকারিতা কি কি?
মূলত, এই গবেষণাটি খাবারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ খুঁজে বের করার জন্য করা হয়েছিল। লাল এবং সবুজ আপেল যথাক্রমে ১২ তম এবং ১৩ তম স্থানে রয়েছে। এর মানে এই নয় যে আপনাকে শুধু আপেল খেতে হবে। আপেলের মতো প্রতিদিন একটি কলা খাওয়াও শরীরের জন্য উপকারী। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য আপনাকে স্বাস্থ্যকর খাবারে অভ্যস্ত হতে হবে।
ডাক্তারের কাছে যাওয়ার দরকার নেই – এটা শুধু কথার ব্যাপার, কিন্তু আপেলে এমন কিছু উপাদান আছে যা শরীরের জন্য সত্যিই ভালো। এই প্রচলিত কথার গুরুত্ব বোঝার জন্য আপেল খাওয়া এর উপকারী দিক সম্পর্কে জানা ভালো। তাহলে আসুন দেখে নিই আপেলের কিছু বৈশিষ্ট্য যা আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
১) সাদা ঝকঝকে দাঁত
আপেল খাওয়া দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। কারণ আমরা যখন আপেল চিবানো শুরু করি, তখন আমাদের মুখের ভিতরে লালা তৈরি হয়। এই পদ্ধতি দাঁতের কোণ থেকে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করে। ফলে ব্যাকটেরিয়া আর আমাদের দাঁতের ক্ষতি করতে পারে না। সুতরাং, শুধু আপেল খেয়ে দাঁতের যত্ন নিবেন না! একটি ভালোমানের পেস্ট দিয়ে ব্রাশ ব্যবহার করে আপনার দাঁতের যত্ন নিতে ভুলবেন না।
২) ক্যান্সার দূর করে
আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চের মতে, প্রতিদিন আপেল খাওয়া অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় ২৩% কমিয়ে দেয়। কারণ আপেলে প্রচুর পরিমাণে ফ্লেভোনল থাকে। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ট্রিটারপেনয়েডস নামে পরিচিত আপেলের কিছু উপাদানও খুঁজে পেয়েছেন। এই উপাদানটি লিভার, স্তন এবং কোলন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের গবেষণায় দেখা গেছে যে, আপেলের মধ্যে যে পরিমাণে ফাইবার থাকে, আর তাই আপেল কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
৩) ডায়াবেটিসের সমস্যা কমায়
যে মেয়েরা প্রতিদিন আপেল খায় তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ২৮% কমে যায়। কারণ আপেলে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৪) কোলেস্টেরল কমায়
আপেলে থাকা ফাইবার অন্ত্রের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। ফলস্বরূপ, কোলেস্টেরলের মাত্রা সঠিক থাকে। আর একবার শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে শুরু করলে হৃদযন্ত্রের যে কোনো ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়।
৫) হার্ট ভাল রাখে
আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, আপেলে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, আপেলের খোসায় থাকা ফেনোলিক উপাদান রক্তনালী থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। এর ফলে হার্টে রক্তচলাচল স্বাভাবিক থাকতে থাকে। এটি হার্টের যে কোনও ক্ষতির ঝুঁকি হ্রাস করে।
৬) পিত্তথলির পাথর নিরাময়ে সাহায্য করে
পিত্তথলিতে পাথর তৈরি হয় যখন অতিরিক্ত পরিমাণে কোলেস্টেরল পিত্তথলিতে জমা হয়। পিত্তথলির পাথর কমাতে চিকিৎসকরা সব সময় ফাইবার সমৃদ্ধ ফল বা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন। পিত্তথলির পাথর নিরাময়ের জন্য ওজন এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও পরামর্শ দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এই সবকটি কাজ যাতে ঠিক মতো হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে আপেলের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
৭) ডায়রিয়া এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
আপনি কি সারাদিন বার বার বাথরুমে যেতে থাকেন? খাবার খেলেই বাথরুমে দৌড়াতে হয়? এমনও কি হয়, প্রায়ই আপনি বাথরুমে গিয়ে অনেকক্ষণ বসে থাকেন? কিন্তু পেট মোটেও পরিষ্কার হয় না। তাহলে এই দুটি সমস্যার একটি মাত্র চিকিৎসা আছে, আর সেটা হল আপেল, যা প্রয়োজন মতো বর্জ্য থেকে অতিরিক্ত পানি তুলতে পারে। ফলে একদিকে আপনাকে অতিরিক্ত সময়ে বাথরুমে যেতে হবে না, অন্যদিকে এটি হজম শক্তি বাড়ায়, সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর করে।
৮) ওজন কমাতে সাহায্য করে
এমন অনেক মানুষ আছেন যারা অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভুগছেন। আবার, শুধুমাত্র এই কারণে, বিভিন্ন রোগও শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। এমনকি, ডায়াবেটিস, হাড়ের রোগসহ কত কিছুই হয়ে যায়। তাই আপনি যদি সেই সব রোগকে বিদায় জানাতে চান, তাহলে নিয়ম করে আপেল খাওয়া ভালো। ফলের মধ্যে থাকা ফাইবার কোন ক্যালোরি ছাড়াই আপনার পেট ভরাতে সাহায্য করে। ফলে ওজনও নিয়ন্ত্রণে আসে।
৯) লিভার সুস্থ থাকে
আমরা যা কিছু খাই তাতে কিছু ক্ষতিকর পদার্থ থাকে। ফলে আমাদের লিভার নষ্ট হতে শুরু করে। সেজন্য লিভারকে সুস্থ রাখা খুবই চিন্তার বিষয়। তবে আপেল খাওয়া লিভারকে শতভাগ সুস্থ রাখতে পারে। এটি লিভারে জমে থাকা ক্ষতিকারক পদার্থ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে সহায়তা করে।
১০) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আপেলে রয়েছে এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা কুয়েরসেটিন নামে পরিচিত। এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।-বোল্ডস্কাই
রেফারেন্সঃ